অবহেলিত অগ্নিযুগের বিপ্লবী সংস্কৃতির শহরে : বছরভোর ব‍্যবসা মূর্তি আড়াল রেখে

23rd March 2021 9:19 am বর্ধমান
অবহেলিত অগ্নিযুগের বিপ্লবী সংস্কৃতির শহরে : বছরভোর ব‍্যবসা মূর্তি আড়াল রেখে


মধুসূদন চন্দ্র ( বর্ধমান ) : আপন মনে ছবি তুলছি মোবাইলের ক্যামেরায়।তখন ওদের ব্যবসা উঠলো মাথায়।একটা চঞ্চলতা লক্ষ‍্য করা গেল। একজন বলে উঠলো- এ প্রেস কা আদমি হ্যায় । কাছে এসে মুখের কাছে মুখ রেখে বলল - বাবু দেখবেন আমাদের ব্যবসার যেন কোন ক্ষতি না হয়।দেখুন আমরা ভগত জির ফ্রন্ট টা ছেরে রেখেছি। আবার বলতে লাগলো- দেখিয়ে বাবু ওনার জনম দিন মরন দিন আমরাই তো মালা দিয়ে সম্মান করি। কেউ একে দেখে না বাবু।আমি জিজ্ঞাসা করলাম বলুনতো কবে জনম দিন কবে মরন দিন ? তারা অবলীলায় সঠিক উত্তর দিল। আমি চমকে উঠলাম।অল্প শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষ গুলো বিপ্লবী শহীদ ভগত সিং কে কত সন্মান করে । উপায় নাই- তাদের ব্যবসা করার জায়গা নেই । তাই তারা ভগত সিং এর কোলে কাপড়ের পসার নিয়ে বসেছে- পেট যে বড় বালাই। একদিন নয় , সারা বছর ধরেই বিপ্লবীর মূর্তি আড়াল করে চলে ব‍্যবসা । পসার সাজিয়ে রাখা হয় বিপ্লবীকে আড়াল করেই । এত গুলি কথা বলার কারন আমাকে মুগ্ধ করেছে বর্ধমান জংশনের পাঁচ মাথার মোড়ে ওই ব্যবসায়ীরা। যতটা জানা গেল জন্ম দিনে বা মৃত্যুদিনে যে গাঁদা ফুলের মালাটি বিপ্লবীর গলায় ঝোলে সেটি ওই ফুটপাত ব্যবসায়ীরই দেন । ভগবান মানেন বিপ্লবী শহীদ ভগত সিং কে। দুঃখ করে জানালেন  কোন একজন বামপন্থী নেতার উদ্যোগে এক সময় মূর্তি পরিস্কার করতে এসে কোন এক জন মদ্যপ অবস্থায় টুপি ধরে ঝুললে টুপি টা ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে কেউ মেরামতিও করে দেয়নি। ভাঙ্গা টুপি পরেই পাঁচ মাথার মোড়ে বিপ্লবী শহীদ ভগত সিং বিরাজ করছেন। ২৩ শে মার্চ১৯৩১ সালে এই দেশ নায়কের ফাঁসী হয় শিবরাম হরি  রাজগুরু ও সুকদেব থাপার সঙ্গে।পিশাচ বৃটিশের ক্রোধানল থেকে দেশকে  উদ্ধার করতে গিয়ে দেশের জন্য আত্মবলিদান করে এই মহান বিপ্লবী । বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর অভিন্য হৃদয় বন্ধু বর্ধমান আসেন ১৯২৮ সালে। ১৫ দিন যাপন করেছিলেন বর্ধমানের গৌরব ওঁয়াড়িতে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর জন্ম ভিটাতে।এই বর্ধমানে বসেই পরিকল্পনা হয়ে ছিল পার্লামেন্টে বোমা নিক্ষেপের।বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত ও বিপ্লবী ভগত সিং এর পরিকল্পিত পার্লামেন্ট আক্রমন  ইতিহাসে অবিশ্বরনীয় ঘটনা।সারা ভারত যুবলীগ এর দেবব্রত বিশ্বাস এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘ দিন আগে।জন্ম দিনে বা মত্যুদিনে এই মহান বিপ্লবীর মূর্তি থেকে বর্ধমানের শিক্ষিত সমাজ নেতা মন্ত্রী প্রশাসন মুখ ফিরিয়ে থাকেলেও যাদের প্রতি আমরা আঙ্গুল তুলি , ব্যবসায়িক জিনিস দিয়ে ঢেকে রেখেছে বলে অভিযোগ করি- তারাই প্রকৃত শ্রদ্ধা জানান বিপ্লবী শহীদ ভগত সিং এর জন্ম ও মৃত্যু দিনে।এবিষয়ে বর্ধমান শহর বাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সচেতনতার সঙ্গে এই মহাপুরুষদের প্রকৃত সম্মান দিতে এগিয়ে আসুন।

লেখক পরিচিতি : সম্পাদক , শহীদ বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি রক্ষা কমিটি 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।